একজন ক্যান্সার রুগী- চায়নার বিখ্যাত হারবিন প্রভিন্সিয়াল হসপিটাল থেকে তুলা ছবি। একজন ক্যান্সার রুগী ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে আসে এবং কর্তব্যরত ডাক্তারকে বলে তার জীবন রক্ষা করার জন্য। ডাক্তার সব কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বুঝতে পারলেন অনেক দেরি হয়ে গেছে কারণ তখন ক্যান্সার অলরেডি ফাইনাল স্টেজ এ চলে গিয়েছে।
ডাক্তারের মুখে এ কথা শুনবার পর রুগী অনেক বেশী হতাশ হন এবং রেগে যান। রেগে গিয়ে তার ব্যাগ ভর্তি টাকা হসপিটালের করিডোরে ছুড়ে ফেলে দেন এবং চিৎকার করে বলতে থাকেন,
“কি হবে এই ব্যাগ ভর্তি টাকা দিয়ে?”
“এই অর্থ যদি আমার জীবন বাঁচাতে না পারে এর কি মূল্য আছে?”
জীবনে বেঁচে থাকতে গেলে অর্থের প্রয়োজন অপরিসীম কিন্তু নিজের স্বাস্থ্য খারাপ করে টাকা উপার্জন বুদ্ধিমানের কাজ বলে আমার মনে হয় না।
টাকা দিয়ে আপনি কখনো সময় কিনতে পারবেন না, সুস্বাস্থ্য বা একটি জীবন কিনতে পারবেন না।
আমাদের একটা মাত্রই জীবন তাই আমরা যাই কিছু করিনা না কেন সব সময় যেন নিজের প্রতি একটু খেয়াল রাখি এবং সব সময় সুস্বাস্থ্য বজায় রেখে চলতে পারি। মনে রাখবেন “স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল”
ফেরাউন মেয়ের চুল আঁচড়ানোর কাজ করতো এক মহিলা একদিন চুল আঁচড়ানোর সময়…
ফেরাউন কন্যার চুল আঁচড়ানোর কাজে নিয়োজিত ছিল একজন মহিলা। কোনো একদিন ফেরাউন কন্যার চুল আঁচড়ানোর সময় সহসা চিরুণি তার হাত থেকে মাটিতে পড়ে গেল। তা ওঠাতে গিয়ে আনমনে তার মুখ থেকে বের হয়ে পড়ল,বিসমিল্লাহ্। আল্লাহু আকবর।
এ কথায় ফেরাউনের কন্যার সন্দেহ হলে জিজ্ঞেস করল, ফেরাউন ছাড়াও কি তোমার কোনো আল্লাহ আছে নাকি? দাসী জবাবে বলল, “আমার আল্লাহ সেই যে ফেরাউনেরও আল্লাহ। শুধু ফেরাউন নয় সে আকাশ জমিনেরও আল্লাহ। তিনি একক তাঁর কোনো শরীক নেই।
একথা শুনে রাগে ফেরাউনের কন্যা অগ্নিশর্মা হয়ে পিতার কাছে গিয়ে বলল, আব্বা আমার চুল বিন্যাসকারিণী বলে কি, আমার আল্লাহ সেই যে ফেরাউনেরও আল্লাহ, আসমান জমিনেরও আল্লাহ। তার কোনো শরীক নেই।
ফেরাউন বলল, এক্ষুণি তাকে হাজির কর’। সাথে সাথে তাকে হাজির করা হলো। সেও নির্ভয়ে হাজির হলো। আজ তার আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার ঈমানী পরীক্ষার দিন। এতে প্রাণ দিতে হলে দেবে। তারই ভালোবাসায় যদি জীবন দেওয়া যায় তবেই তো ধন্য।
ফেরাউন জিজ্ঞেস করল, তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত কর? তিনি বললেন, “হ্যাঁ”। ফেরাউন বলল, সে আল্লাহকে ছেড়ে এখনই আমার সামনে আমার আল্লাহয়ী স্বীকার কর’।
তিনি বললেন, “না কিয়ামত পর্যন্তও তা আমার দ্বারা সম্ভব হবে না”। নির্দেশ দেওয়া হলো তাকে সিকল দিয়ে বেধে ফেলার। তৎক্ষণাৎ তাকে শুইয়ে তার হাতে ও পায়ে সিকল বাধা হলো।
তারপর আল্লাহ ওয়ালাদেরকে কষ্ট দেওয়ার জন্য যে বিষাক্ত সাপ, বিচ্ছু রাখা হতো তাও এনে তার উপর ছেড়ে দেওয়া হলো। বলা হলো, এখনো সময় আছে তোমার আল্লাহকে ছাড় নতুবা তোমাকে লাগাতার এ শাস্তি দেওয়া হবে’।তিনি বললেন, “তুমি আমাকে যত পার শাস্তি দিয়ে দেখ আল্লাহ্ প্রতি ভালোবাসা এক বিন্দুও কমবে না, বরং বাড়বে”।
ঈমানের অবস্থা এই রকম যে, যখন তার স্বাদ কোনো অন্তরে প্রবেশ করে তখন তা আর বের হয়না। হে ফেরাউন শুনে রাখ, তুমি যদি বছরের পর বছর আমাকে শাস্তি দিতে থাক তবুও আমি আমার মহান প্রভুকে পরিহার করব না।
এ নেক মহিলার পাচটি সন্তান ছিল একটি ছিল দুগ্ধপোষ্য। ফেরাউন তাকে উচিত শিক্ষা দিতে সন্তানদেরকে তার মায়ের সামনে এনে।প্রথমে বড় সন্তানকে গরম তেল এর পাতিলে ফেলে দেয়।
তারপর বলল, ‘এখনও সুযোগ আছে নতুবা সব সন্তানকে হারাবে। তোমার দুগ্ধপোষ্য এ শিশুটিকেও হত্যা করা হবে। তিনি বললেন, “যদি তুমি যাই কর, তবুও আমি আমার আল্লাহকে ছাড়ব না।
একথা শুনে হুকুম দেওয়া হলো পর পর চারটি শিশুকে গরম তেল এ ফেলে দেওয়া হল।আর কিছুক্ষণ পরেই ভেসে উঠছিল তাদের হাড়গুলো। দুদ্ধপুষ্ট শিশু সন্তানটি মায়ের বুকের উপর চড়ে দুধ পান করছিল তাকেও টেনে হিছড়ে নিয়ে যেতে ধরল।এ অবস্থা দেখে মায়ের চোখে পানি আর ধরছিল না।
৬ মাসের এ শিশুর মুখ থেকে কথা বের হলো, বলল, মা কেন কাঁদ? জান্নাত তোমার জন্য সুসজ্জিত করা হচ্ছে। মা জান্নাতে পৌঁছে আল্লাহর দীদার হাসিল হবে”।এখনো কথা বলতে পারে না এমন শিশুর মুখ থেকে একথা শুনে মা অবাক হলেন। ঈমান আরও মজবুত হলো।
জালিমরা শিশুটিকে হত্যা করল। এরপর তাকেও গরম তেল এ ফেলা হল।মা প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে চির জান্নাত বাসিনী হলেন। তাফসিরে দুররে মানসুরে আছে, রাসুল (সাঃ) যখন মেরাজে যাচ্ছিলেন, বোরাক মিসরের কাছাকাছি এক ময়দানে পৌঁছল,তখন জান্নাতের খুশবু তিনি অনুভব করলেন।
বললেন, “খুব সুন্দর সুঘ্রাণ পাচ্ছি, মনে হয় এটা জান্নাতের সুঘ্রাণ।” জিবরাইল (আঃ) বললেন, জান্নাত তো অনেক দূরে, মনে হয়,ফেরাউন কন্যার কেশ বিন্যাসকারিণী মহিলার কবর থেকে এ সুঘ্রাণ আসছে। সুবহানাল্লাহ।
হযরত মুসা (আঃ) একদিন আল্লাহ্র কাছে জিজ্ঞাসা করলেনঃ “সবচেয়ে বড় পাপি কে? আল্লাহ্ যে উত্তর দিলেন
হযরত মুসা (আঃ) একদিন স্রষ্টার কাছে জিজ্ঞাসা করলেনঃ “হে প্রভু! আমার অনুসারীদের মধ্যে কে সবচেয়ে বড় পাপি?”
স্রষ্টার উত্তরঃ “যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম এই পথ অতিক্রম করবে, সে ব্যক্তি-ই হলো তোমার অনুসারীদের মধ্যে বড় পাপি”
স্রষ্টার কথানুযায়ী হযরত মুসা (আঃ) বসে দেখছেন, কিছুক্ষণ পর দেখলেন এক ব্যাক্তি ছোট একটি ছেলেকে কোলে করে পথ অতিক্রম করছে। মুসা(আঃ) বুঝে ফেললেন এই সেই বড় পাপি
মুসা(আঃ) স্রষ্টাকে বললেনঃ “প্রভু, এখন আমাকে সবচেয়ে নেকী মানুষটিকে দেখান।”
স্রষ্টার উত্তরঃ “সূর্য্য ডুবার সাথে সাথে যে লোকটি তোমার পূর্বস্থান দিয়ে চলে যাবে সেই হইলো সবচেয়ে নেকী”
মুসা(আঃ) সূর্য ডুবার বেশ আগের থেকে বসে রইলেন যেই সূর্য্য ডুবছিলো দেখলেন সে সকালের ব্যাক্তি-ই ছোট ছেলেকে কোলে করে ফিরে যাচ্ছে। মুসা(আঃ) হতভম্ব হয়ে স্রস্টাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ “প্রভু একই ব্যক্তি মহা পাপি আবার মহা নেকী” .
স্রষ্টা বললেনঃ “হে- মুসা! সকালে যখন এই ব্যাক্তি ছেলেকে সাথে নিয়ে তোমাকে অতিক্রম করে জঙ্গলে প্রবেশ করলো, তখন কোলের ছেলেটি বাবাকে প্রশ্ন করেছিলো, বাবা! এই জঙ্গল কতবড়? বাবা উত্তরে বলেছিলো,অনেক বড়। ছেলে আবার প্রশ্ন করলো, বাবা! জঙ্গল থেকে কি বড় কোনো কিছু আছে?
তখন বাবা বলেছিলো, হ্যাঁ বাবা! ঐ পাহাড়গুলো জঙ্গল থেকে বড়। ছেলে পুনরায় প্রশ্ন করলো,পাহাড় থেকে কি বড় কিছু আছে? বাবা বললো, আছে, এই আকাশ। ছেলে আবার প্রশ্ন করলো, আকাশ থেকে কি বড় কিছু আছে? সেই ব্যক্তি বললো, হ্যাঁ, আমার পাপ এই আকাশ থেকেও বড়।
ছেলে বাবার এ উত্তর শোনে বললো, বাবা! তোমার পাপ থেকে বড় কি কোনো কিছু নেই? তখন বাবাটি চিৎকার দিয়ে ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো আমার পাপ থেকেও অনেক অনেক বড় আমাদের স্রস্টার রহমত হে-মুসা! এই ব্যক্তির পাপের অনুভূতি ও অনুশোচনা আমার এতো পছন্দ হয়েছে যে সবচেয়ে পাপি ব্যক্তিকে সবচেয়ে’ নেকী ব্যক্তি বানিয়ে দিয়েছি।
মনে রাখবা আমার শাস্তির হাত থেকে ক্ষমার হাত বহুগুন বড়। হে প্রভু আপনি আমাদের সকলকে পিছনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে সামনের দিনগুলোকে সত্যপথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন,,,,,